নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গতি দিয়ে ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন পেসাররা। সেই ভিতে দাঁড়িয়ে উড়ন্ত শুরু করলেন গেইল, গড়লেন ছক্কার রেকর্ড। এমনই এক ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে গুড়িয়ে আইসিসি ২০১৯ বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে কটরেল, হোল্ডার, রাসেল, থমাসের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ২১.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।
জবাবে গেইলের উড়ন্ত ফিফটিতে মাত্র ১৩.৪ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ক্যারিবিয়রা। ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন বিপিএলে সিলেট সিক্সর্সের হয়ে খেলা নিকোলাস পুরান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান : ২১.৪ ওভারে ১০৫ (ইমাম ২, ফখর ২২, বাবর ২২, হারিস ৮, সরফরাজ ৮, হাফিজ ১৬, ওয়াসিম ১, শাদাব ০, হাসান ১, ওয়াহাব ১৮, আমির ৩*; কটরেল ৪-০-১৮-১, হোল্ডার ৫-০-৪২-৩, রাসেল ৩-১-৪-২, ব্র্যাথওয়েট ৪-০-১৪-০, টমাস ৫.৪-০-২৭-৪)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১৩.৪ ওভারে ১০৮ (গেইল ৫০, হোপ ১১, ব্রাভো ০, পুরান ৩৪*, হেটমায়ার ৭*; আমির ৬-০-২৬-৩, হাসান ৪-০-৩৯-০, ওয়াহাব ৩.৪-১-৪০-০)।
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী।
গেইলকে ফেরালেন সেই আমির
লক্ষ্য ছোট কিন্তু তার ব্যাট তো চওড়া। সেই ব্যাটে চড়েই জয়ের খুব কাছে চলে এসেছিল ওয়েস্ট েইন্ডিজ। তবে শেষটা করে যেতে পারলেন না ক্রিস গেইল। ঝড়ো ফিফটি তুলেই সেই আমিরের বলে ফিরে গেছেন ব্যাটিং দানব।
১১ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৭৭।
আমিরের দ্বিতীয় শিকার ব্রাভো
ভয়ঙ্কার হয়ে ওঠার আগেই শাই হোপকে (১১) ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ আমির। পরের ওভারে এসেই এই পেসারের শিকার শূণ্য রান করা ড্যারেন ব্রাভো।
৯ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫৬।
গেইলের ছক্কার রেকর্ড
ব্যাটিংয়ে প্রায় সব রেকর্ডেই নিজের নামে করেছেন ক্যারিয়ারের কোনো না কোনো সময়। পেয়েছেন ব্যাটিং দানব উপাধী। নিজে দিয়েছেন ‘ইউনিভার্স বস’ খেতাব। তার প্রতি সুবিচার না করলে কি হয়! মোক্ষম এক সুযোগ পেয়ে গেছেন নিজের শেষ বিশ্বকাপ আসরের প্রথম ম্যাচেই।
নিজের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলটিই কাটার দিতে চেয়েছিলেন গেইলকে। বাঁ পায়ের উপরে আসতেই সজোরে হাঁকিয়েছেন, সোজা লং অনের উপর দিয়ে ছক্কা! ওয়ানডে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডটি একান্তই নিজের করে নিয়েছেন এই ওপেনার। ৩৭টি করে ছক্কা মেরে এর আগে দক্ষিন আফ্রিকান সাবেক ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে এতদিন ভাগাভাগি করেছেন গেইল। পরের বলেই মেরেছেন আরেকটি। সঙ্গে পাঁচ চারে অপরাজিত আছেন ২৮ বলে ৩৮ রান নিয়ে।
বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি তো বটেই, প্রথম ডাবলের মালিকও ক্রিস গেইল। সেই ক্যারিবিয়ান দানবের হাতেই উঠলো আরেকটি রেকর্ড।
৬ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৪৬।
ক্যারিবিয়ার তোপে উড়ে গেল পাকিস্তান
টানা ১০ হারের লজ্জার সেই বৃত্ত থেকে বেরুতে চেয়েছিল পাকিস্তান। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল অপর ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। তবে সেটি হতে হলে আরো বড় কোনো অঘটনের জন্ম দিতে হবে সরফরাজের দলকে। তার আগেই উল্টো নিজেদের অস্বাভাবিক আচরণে লজ্জার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে পাকিস্তান।
বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের লজ্জায় পড়ল ১৯৯২ সালের চ্যাম্পিয়নরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং তোপে মাত্র ২১.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে গেছে সরফরাজের দল।
২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে এই ধ্বসের নেতৃত্বে ওশানে থমাস। তার শেষ শিকার হিসেবে ওয়াহাব রিয়াজের বিদায়েই শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস।
তবে মিডল অর্ডার গুড়িয়ে আসল কাজটি করে দিয়েছেন অধিনায়ক হোল্ডার, নিয়েছেন ৪২ রানে ৩ উইকেট। মাঝে আন্দ্রে রাসেলের জোড়া উইকেটও ছিল কার্যকরী। আর শুরুতেই ইমামকে ফিরিয়ে কট্রেলের ‘স্যালুট’ উদযাপনও তো জুগিয়েছে বিনোদনের খোরাক। ৫ পেসারের একমাত্র ব্রাথওয়েট ছিলেন উইকেটশূণ্য, তবে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে তার অবদানও কম নয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ইনিংস : ২১.৪ ওভারে ১০৫ (ইমাম ২, ফখর ২২, বাবর ২২, হারিস ৮, সরফরাজ ৮, হাফিজ ১৬, ওয়াসিম ১, শাদাব ০, হাসান ১, ওয়াহাব ১৮, আমির ৩*; কটরেল ৪-০-১৮-১, হোল্ডার ৫-০-৪২-৩, রাসেল ৩-১-৪-২, ব্র্যাথওয়েট ৪-০-১৪-০, টমাস ৫.৪-০-২৭-৪)।
হোপ-হোল্ডারে দিশেহারা
নিজের আগের ওভারেই ইমাদ ওয়াসিমকে (১) ফিরিয়েছিলেন জেসন হোল্ডার, ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের তৃতীয় শিকারে পরিণত হয়েছেন হাসান আলী (১)। পাকিস্তানের ইনিংসও থমকে আছে একশ’র গণ্ডিতে।
১৯.৩ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ৮৪।
হোপের খাঁচায় বন্দী
৭৫ রান তুলতেই নেই পাকিস্তানের ৫ উইকেট! যার চারটিই ক্যাচ, সবক’টিই উইকেটের পেছনে! কোনটি লাফিয়ে উঠে, কোনটি নিচু হয়ে আবার কোনটি উড়ে গিয়ে তালুবন্দী করেছেন শাই হোপ। সবশেষে তার শিকার পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের বলে ১২ বলে ৮ রান করে আরেক কিপারের হাতে এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের বিদায়ে লজ্জার শঙ্কায় পাকিস্তান।
১৬.১ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্র ৫ উইকেটে ৭৫।
এবার খোঁচা মেরে বাবরের বিদায়
রান আসছে রানের মত, উইকেটও পড়ছে সমান তালে। আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান বলেই হচ্ছে এমনটা সম্ভব! বাজে আউটের মিছিলে এবার শিকার বাবর আজম। শিকারির ভুমিকায় এবার ওশানে থমাস।
এই গতি তারকার একটি সুইঙ্গার ঠিক মতো ব্যাটে বলে করতে পারেন নি বাবর। ব্যাটের কানা চুমু দিয়েই ছুট দেয় উইকেটের পেছনে। এবারও আশাহত করেননি হোপ। দক্ষ হাতে, ক্ষীপ্রতার সঙ্গে ডানদিকে উড়ে গিয়ে তালুবন্দী করেন ক্যারিবিয়ান উইকেটরক্ষক।
১৫ ওভার শেষে পাকিস্তানের ঝুলিতে ৪ উইকেটে ৭২।
রাসেলের দ্বিতীয় শিকার হারিস
স্বাভাবিক বল করে নিজের এক ওভার আগেই ফিরিয়েছেন ভয়ঙ্কর ফখর জামানকে। পরের ওভারে ফিরেই হারিস সোহেলকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করলেন আন্দ্রে রাসেল। এবারও বলটি খুব আহামরি হয়েছে তা নয়, তবে ছিল বৃদ্ধিদীপ্ত।
টানা তিনটি স্লো বল দেয়ার পর হঠাৎই ১৪৫ কিলোমিটার বেগের লাফিয়ে ওঠা বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি হারিস, ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে, তা তালুবন্দী করতে কোন ভুল করেন নি শাই হোপ।
১০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারানো পাকিস্তানের সংগ্রহ ৪৬।
ফখরকে হারিয়ে বিপদে পাকিস্তান
শুরুতেই উইকেট হারানোর চাপ সামালের চেষ্টা করা তো দূরের কথা নিজেদের খামখেয়ালি শটে রান পেয়ে যাওয়ার লোভে ফের বিপদ বাড়াল পাকিস্তান। কটরেল-হোল্ডারদের পর আন্দ্রে রাসেলকেও হাত খুলে মারতে গিয়েই লাফিয়ে ওঠা বলটি ব্যাট, গ্লাভস হয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে, বোল্ড ফখর জামান! ফিরে যাবার আগে ১৬ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ২২ রান করেন এই ওপেনার।
৮ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪২।
অস্বস্তি নিয়ে ফিরে গেলেন ইমাম
শুরু থেকেই ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগছেন। সেটিই সত্যি হলো। যার প্রথম ওভার দিয়েছিলেন মেডেন (একটি ওয়াইড বাদে) সেই কটরেলের দ্বিতীয় ওভারেই ওনেকটা উপরে ওঠা লেগ স্ট্যাম্পের বাইরের বাজে একটি বলে ফ্লিক করতে গিয়ে তালুবন্দী হন ১১ বল খেলে মাত্র ২ রান করা ইমাম-উল-হক।
তবে অপরপ্রান্তে ঠিকই দেখে শুনে বুঝে দলের রান বাড়িয়ে চলেছেন ফখর জামান। অপরাজিত আছেন ১২ বালে ২১ রান নিয়ে। তাকে সঙ্গ দিতে আসা বাবর আজমও খেলছেন হাত খুলে (৬ বলে ৯)।
৫ ওভার শেষে ঐ এক উইকেট হারানো পাকিস্তানের সংগ্রহ ৩৩ রান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজের কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখে বল বেছে নিয়েছেন বলে জানান উইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার।
ঠিক বিপরীতমুখী অবস্থানে থেকে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে সাবেক দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। টানা ১০ ম্যাচ হারের ধাক্কা সঙ্গে নিয়ে ক্রিকেটের মহাযজ্ঞে পা রাখছে সরফরাজ আহমেদের পাকিস্তান। প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের সঙ্গেও পেরে ওঠেনি দলটি।
অন্যদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে আছে ফুরফুরে মেজাজে। ওই ম্যাচে জেসন হোল্ডাররা তুলেছিলেন চারশর বেশি রান। তার আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে না খেলা ক্রিস গেইল-আন্দ্রে রাসেলরা ফিরেছেন দলে। তাতে উইন্ডিজের শক্তির কামানে যোগ হয়েছে নতুন গোলা।
তবে আইসিসি ইভেন্টে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের রেকর্ড বেশ সমৃদ্ধ। সবশেষ ২০১৭ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিরোপা জিতেছিলো তারা। যদিও ওই আসরে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে তলানিতে ছিলো দলটি।
পরিসংখ্যান :
মুখোমুখি লড়াইয়ে হার-জিতের সংখ্যা বিবেচনা করলে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে যোজন যোজন দূরত্ব! বিশ্বকাপেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
ওয়ানডেতে:
ম্যাচ: ১৩৩
ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ী: ৭০
পাকিস্তান জয়ী: ৩০
টাই: ৩
বিশ্বকাপে :
ম্যাচ: ১০
ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ী: ৭
পাকিস্তান জয়ী: ৩
পাকিস্তান একাদশ : ইমাম-উল-হক, ফখর জামান, বাবর আজম, হারিস সোহেল, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক), মোহাম্মাদ হাফিজ, ইমাদ ওয়াসিম, শাদাব খান, মোহাম্মদ আমির, হাসান আলী ও ওয়াহাব রিয়াজ।
উইন্ডিজ একাদশ : ক্রিস গেইল, শাই হোপ, ড্যারেন ব্রাভো, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরান, আন্দ্রে রাসেল, জেসন হোল্ডার, কার্লোস ব্রাথওয়েট, অ্যাশলে নার্স, শেলডন কটরেল ও ওশানে থমাস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।